ড্রাগন ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা
প্রিয় পাঠক বিন্দু “ আসসালামু আলাইকুম”। আজকে এই আর্টিকেলটি হচ্ছে ড্রাগন ফলের
উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আপনারা অনেকেই হয়তো ড্রাগন ফলের উপকারিতা এবং
অপকারিতা সম্পর্কে জানেন না। ড্রাগন ফল বর্তমানে সকলেই গ্রহণ করে থাকে কিন্তু
অনেকে আছেন যে এই ফল সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানেন না।
ড্রাগন ফল একটি পুষ্টি সমৃদ্ধ ফল এতে থাকা পুষ্টি উপাদান ভিটামিন আইরন এবং
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মানুষের শরীরের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে থাকে
আমরা ড্রাগন ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আর্টিকেলটিতে জানতে পারবো।
এছাড়াও আরো জানতে পারবো গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফল কিভাবে সাহায্য করে থাকে এবং
ড্রাগন ফলের খোসা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে।
ড্রাগন ফলের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা
বাংলাদেশের সবচেয়ে পরিচিত ফলের মধ্যে ড্রাগন ফল অন্যতম। বর্তমানে সারা বছরই এখন
ড্রাগন ফল দেখা যায়। ড্রাগন ফল আঁশ জাতীয় উপাদান, আমাদের হজমে সাহায্য করে। এটি
খাওয়ার ফলে আমাদের দীর্ঘ সময় পেট ভরে থাকে ড্রাগন ফলে রয়েছে অনেক ধরনের
পুষ্টিগুণ এবং এটি আমাদের অনেক উপকারে আসে নিচে তা ব্যাখ্যা করা হলো
- রক্তের ক্ষতিকারক মাত্রা কমাতে সাহায্য করে ড্রাগন ফল। ড্রাগন ফলে রয়েছে নিম্ন মাত্রার ক্যালরি । যার ফলে অতিরিক্ত ওজন বিশিষ্ট ব্যক্তিরাম এই ফলটি গ্রহণ করতে পারে।
- পর্যাপ্ত পরিমাণ আইরন ছাড়া শরীরের হিমোগ্লোবিন বাড়ানো অসম্ভব। আর এই আইরন উচ্চমাত্রায় ড্রাগন ফলে পাওয়া যায়। সকল বয়সের মানুষ এই ফল বিনা দ্বিধায় গ্রহণ করতে পারে এটি কোন অপারেশন রোগীরও আয়রনের ঘাটতি পূরণ করতে সক্ষম
- নাচ চুল হার দাঁত ইত্যাদি ইত্যাদি মজবুত করার জন্য প্রয়োজনীয় আইরন ক্যালসিয়াম এবং খনিজ লবণ আমরা ড্রাগন ফল থেকে পেয়ে থাকে।
- বয়স বৃদ্ধি পেতে শুরু হওয়া মাত্রই শরীরের দুর্বলতা এবং হার ক্ষয় দেখা দেয় ড্রাগন ফল সকল দুর্বলতা এবং শরীরের ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ করে।
- ড্রাগন ফলে আরো রয়েছে ক্যারোটিনয়েড বিটালেইন নামের গুরুত্বপূর্ণ সব উপাদান। ড্রাগন ফলে থাকা এই সকল উপাদান ক্যান্সারের বিরুদ্ধে কাজ করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
- বিটা ক্যারোটির নামে এক ধরনের ভিটামিন সি ড্রাগন ফলে পাওয়া যায় এটি শরীরের ক্ষতস্থান কাটাছড়া এবং নতুন ত্বকের সৃষ্টিতে ভূমিকা পালন করে।
ড্রাগন ফল খাওয়ার সঠিক সময়
রোগ প্রতিরোধের জন্য প্রতিদিন প্রায় 200 গ্রাম ড্রাগন ফল খাওয়ার পরামর্শ পাওয়া
গেছে। ড্রাগন আমাদের শরীরের বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধ কোষ সৃষ্টি করে।আয়রন
সমৃদ্ধ উৎস হচ্ছে ড্রাগন ফল যা হিমোগ্লোবিন সৃষ্টিতে সাহায্য করে। এই ফল মাত্র 14
দিনের মধ্যে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। ১৪ দিন সকাল বেলা নিয়ম করে
ড্রাগন ফল খেলে শরীরে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা স্বাভাবিক হয়।
ড্রাগন ফলে থাকা বি কমপ্লিট ভিটামিন, হিমোগ্লোবিনের লোহিত রক্তকণিকা গঠনে ভূমিকা
পালন করে। প্রতি 100 গ্রাম ড্রাগন ফলে1.9 মিলিগ্রাম আইরন রয়েছে। দৈনিক
সুপারিশকৃত মাত্রায় ১০% বেশি হিমোগ্লোবিন উৎপন্ন হয়। প্রতিটি ফলের মত ড্রাগন ফল
খাওয়ার ভালো এবং সঠিক সময় হচ্ছে সকাল বেলা। এছাড়া আমরা রাত্রে ঘুমানোর আগে
ড্রাগন ফল খেতে পারি।
গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফলের উপকারিতা
ড্রাগন ফলে থাকা ভিটামিন বি ফলেট আইরন ইত্যাদি একজন গর্ভবতীর নারীর জন্য
উপকারী। বলা যেতে পারে একজন গর্ভবতী নারীর জন্য ড্রাগন ফল হচ্ছে আদর্শ ফল।
নবজাত্ব শিশুর জন্মগত ত্রুটি রোধে ভিটামিন বি এবং ফোলেড সাহায্য করে। গর্ভবতী
নারীর শক্তি বৃদ্ধিতেও ড্রাগন ফল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
কারন ড্রাগন ফলে রয়েছে ক্যালসিয়াম যা হারের বিকাশে সাহায্য করে। ড্রাগন ফলে
থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ডিমের গুণমান উন্নত করে তোলে গর্ভধারণের জন্য ড্রাগন
ফলকে ভালো করে তোলে এটি সামগ্রিক প্রজনন স্বাস্থ্যের উন্নতি করে। গর্ভবতী
নারীদের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখতে ড্রাগন ফল ভূমিকা পালন করে থাকে।
ড্রাগন ফল একজন গর্ভবতী নারী জুস করে অথবা ফল কেটেও খেতে পারে। দুই উপায়ে
ড্রাগন ফল খাওয়া যায় এই ফলটি গর্ভাবস্থায় ক্ষতিকর এমন কোন তথ্য এখন পর্যন্ত
পাওয়া যায়নি। কোন ফলের মধ্যে আরেকটি মূল উপাদান হচ্ছে লাইকোপেন যেটি ড্রাগন
ফলের অন্যতম বৈশিষ্ট্যের মধ্যে একটি ।
এই উপাদানটিও গর্ভবতী নারীদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ।এমনকি শিশু জন্ম দেওয়ার
পরেও ড্রাগন ফল নিয়মিতভাবে গ্রহণ করা যেতে পারে এটি মায়ের শরীরের রক্তের
শূন্যতা পূরণ করতে সাহায্য করে ড্রাগন ফলে থাকা প্রচুর পরিমাণে আয়োজন লোহিত
রক্তকণিকার সৃষ্টিতে বিপাক ভাবে সাহায্য করে
ড্রাগন ফলের ক্ষতিকর দিক
সকল ব্যক্তির জানা উচিত অতিরিক্ত কোন কিছু খাওয়ায় উচিত নয়। প্রতিটি জিনিসের
যেমন উপকার রয়েছে ঠিক তেমনি অপকারও রয়েছে। তেমনভাবে ড্রাগন ফল যেমন আমাদের জন্য
অনেক উপকারী তেমনি এর কিছু ক্ষতিকারক দিক অর্থাৎ অপকারও রয়েছে চলুন সেই সম্পর্কে
বিস্তারিতভাবে জেনে নিন।
সাধারণত ড্রাগন ফল খাওয়া নিরাপদ তবে কিছু ব্যক্তির জন্য ড্রাগন ফল
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনুভব করতে পারে যদিও তা বিরল। কিছু সংখ্যক মানুষ রয়েছে
যাদের ড্রাগন ফল খাওয়ার ফলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে। এদের মধ্যে কিছু
সংখ্যক লোকের ড্রাগন ফলে এলার্জি হতে পারে।
ড্রাগন ফল খাওয়ার ফলে যারা এলার্জির সমস্যায় ভুগে তাদের লক্ষণগুলি হচ্ছে
চুলকানি আমতাব একজিমা ঠোঁট মুখ বাজি বা ফুলে যাওয়া ইত্যাদি। যাদের ড্রাগন ফল
খাওয়ার ফলে সমস্যা হয় তাদের আরো কিছু লক্ষণ দেখা যায় যেমন বমি বমি ভাব বমি
হওয়া পেটব্যথা ডায়রিয়া ইত্যাদি।
এছাড়াও যাদের ড্রাগন ফলে সমস্যায় রয়েছে তাদের শ্বাস-প্রশ্বাস নিতেও অনেক
সমস্যা হয়ে থাকে গলা ফুলে যাওয়া গলা ব্যথা করা ইত্যাদি এইসব ব্যক্তিদের লক্ষণ
দেখা দেয়। আপনাদের যাদের এইসব সমস্যা রয়েছে তারা দয়া করে চেষ্টা করবেন ড্রাগন
ফল খাওয়া থেকে বিরত থাকা। অথবা ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী এটি গ্রহণ করবেন।
ড্রাগন ফলের খোসার উপকারিতা
ড্রাগন ফল যেমন আমাদের শরীরের জন্য উপকারী ঠিক তেমনভাবে ড্রাগন ফলে খোসা আমাদের
জন্য অনেক উপকারী। ড্রাগন ফলে খোসার ব্যবহার করলে অনেক রোগের ঝুঁকি কমানো সম্ভব।
যেমন এটি কোলেজস্টেরল কমায়, হার্ট সুস্থ রাখে, ওজন কমায় এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি
কমাতে সাহায্য করে।
এছাড়া এটি ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীদের জন্য ভালো কাজ দিয়ে থাকে। বিভিন্ন হজমের
সমস্যায় সহযোগিতা করে বয়সের ছাপ দূর করতে সহযোগিতা করে। এছাড়াও কোষ্ঠকাঠিন্য
কমায় রক্ত চলাচল চুল পড়া কমায় ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের রোগ থেকে ড্রাগন ফলের
খোসা আমাদের সাহায্য করে থাকে।
ড্রাগন ফলের মধ্যে লাল ড্রাগনের খোসার পাউডার কোলেস্ট্ররল, ট্রাইগ্লিসারীডা
ইত্যাদি মাত্রা বাড়াতে সক্ষম। লাল ড্রাগনের খোসা আমরা খাবার পরিপূরক হিসেবে
গ্রহণ করতে পারি এটি আমাদের শরীরে জন্য সুস্থতা বজায় রাখে এবং স্বাস্থ্যসম্মত
শরীর উপহার দেয়।
লেখকের মন্তব্য
আজকে আমার লেখা আর্টিকেলটি ছিল ড্রাগন ফলে উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে।
আপনারা এখন ড্রাগন ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে
পেরেছেন যারা এই ফলের উপকারিতা সম্পর্কে জানতেন না আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে
আপনারা সেই সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
এছাড়া আপনারা আরও জানতে পেরেছেন এর ফলে খাওয়ার ফলে গর্ভবতী নারীরা কিভাবে উপকৃত
হয় এবং ড্রাগন ফলের খোসা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে। আজকের লেখা আর্টিকেলটি
আপনাদের যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন এবং নিয়মিতভাবে
আমার ওয়েবসাইটটি ভিজিট করবেন। “ধন্যবাদ”।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url